ইন্দ্রজিৎ মিত্র
গোধূলি-বাজার
বে-হিসেবী জলবায়ু স্পন্দনর পাশে সারাদিন ঘোরে
সেখানেই গোধূলি-বাজার। বৃষ্টি হয়, জল জমে রাতে
তারপর ঘর হয়, ঘর বলতে লীলাবতী অংকের খাতা
জটিল ক্যালকুলাসে ডুবে থাকা তুলসিতলা, হিসেব নিকেষ,
যেখানে সন্ধ্যে নামে, ঈষৎ স্পর্শ পাওয়া মেয়েটার চোখে
বাসা বাঁধে কামনা বাবুই, ডানা ঝাপটায় কিত-কিত খেলে
মাঝে মাঝে জিতে যায় সে সমস্ত রোদে ভেজা সুবর্ণ খনি
মেঘ নয়।
প্রেম সে বন্ধ্যা জমি কোনো ঠোঁট করুণা করে নি...
পূর্ণেন্দু মিশ্র
সেই চেয়ারটি
যে চেয়ারটি মনখারাপে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
আদর চোখে আমিও ওর দিকে তাকিয়ে থাকি অনেকক্ষণ,
তারপর ভীষণ ওর কাছে গিয়ে -
পিঠে পিঠ পেতে দিই ।
হাতে ঘষি হাত ।
ও আমাকে তখন আশ্চর্য সব স্বপ্ন দেখায়,
ভাবায়, লেখায়, যথেচ্ছতায় ।
যখন বসি ওর কোলে, জঙ্ঘায় ।।
তন্ময় ধর
জল
আমরা ভাবছি, গল্পটা লেখা হচ্ছে
আয়নায় অনুপস্থিতির জলসীমা বাড়ছে
আয়নাদ্বীপের ভিতর অন্ধ দু'টি শব্দের ক্ষীণ দুয়ার
দুধ, শাদা ভাত ও ক্ষণ-গৃহস্থালি
অন্ধ শব্দ দু'টির বিরতি থেকে
কেউ তুলে নিচ্ছে গৃহহীন চোখ
দৃশ্যের জলমগ্নতার কাছে
স্পর্শরেখা ছিঁড়ে ফেলছে বাকি গল্পটুকু
তুলে নিচ্ছে একমাত্র ফোঁটাটিকে
অভিনীত জলাশয়ের কাছে যে বিশ্বস্ত
হঠাৎই
আয়নার টুকরোগুলোকে আমরা সাজিয়ে ফেলেছি
চের্নোবিল
মিমি সিদ্দিকী
তবু মনে রেখো যতবার তুমি হরণ করেছ বস্ত্র ততবার
নগ্ন হয়েছ তুমি নিজে। একটি মৃত মহাদেশ বিবর্ণ
পত্রশূন্য অরণ্যের মতো কতবার এসে দাঁড়াল
তোমাদের সভ্যতার দরবারে। তবু কালের সুদর্শন
চক্রে রোদ্দুর এসে বুনে দিল জারোয়ার পোশাক,
গর্বিত রত্নশোভিত মুকুট। এখন আমার চারপাশে
ঝরনার গান, পথে পথে মুকুলের আহ্বান ধ্বনি।
তবু বিদ্যুৎবৎ আঙুলের ক্ষিপ্রতায় অতন্দ্র প্রহরায়
ঢেকে রাখি বিষাক্ত হীরক অঙ্গুরীয়। যেখানে
জ্বলজ্বল করছে আমার ক্ষিপ্রতায় স্মৃতি--- দ্রৌপদী!
আমি রানী চের্নোবিল।
এ হৃদয় নিষিদ্ধ পাণ্ডৰ নগরী…