বলার কথা অনেক। যেভাবে খুব দ্রুত আমাদের চারপাশ বদলে যাচ্ছে, একটা ঘটনার ঘাড়ে এসে পড়ছে আর একটা ঘটনা তারপর আর একটা, আর এতসব জানতে জানতে আমরা ক্লান্ত বোধ করছি, ঠিক সেই সময় এসে কী বলব আর কতটা বলব সেটাই ভাবতে হচ্ছে সব থেকে বেশি। যে কোনও বিষয় কে কেন্দ্র করেই তাৎক্ষণিক মন্তব্য, বক্তব্যে ভেসে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া আবার তার পরক্ষণেই মত বদলে ফেলা হচ্ছে দল বেঁধে, তা সত্যিই আশ্চর্য করে। নিজের বক্তব্যে দায়িত্বশীল থাকতে পারছে না অধিকাংশই। কিন্তু কেন হচ্ছে এমন? বিষয়ের গভীরে গিয়ে ভাবার অভ্যেসটাই হারিয়ে যাচ্ছে কি? সব কিছুই তাৎক্ষণিক। তাই কী বলব আর কতটা বলব, ভাবার দরকার।
আর মিডিয়ায় তো সবটাই বিনোদন, সবটাই টি আর পি সম্পর্কিত। মৃত্যু, হত্যার ধারাবিবরণী, সবই বিনোদন। এতে সংবেদনশীল মানুষ কতটা অসুস্থবোধ করছে তার দায় কারোর নেই। সুস্থ রুচিটাই হারিয়ে গিয়েছে সব কিছুর থেকে। এত তথ্যের কি সত্যিই দরকার আছে? একটা তথ্যের বিস্ফোরণের মধ্যে দিয়ে চলছি আমরা। সম্প্রতি স্মার্ট ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে সরে আসার জন্য জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ডিজিটাল ডিটক্স’, সপ্তাহে এক দু দিন সমস্ত ডিজিটাল ডিভাইস থেকে সরে থাকা। আবার তেমনই অনেকে বেছে নিচ্ছেন ‘মিডিয়া রিফিউসাল’, কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া এবং যে কোনও রকন মিডিয়া থেকে দূরে থাকা, যাতে বজায় থাকে মানসিক স্বাস্থ।
প্রতিনিয়ত এত নেগেটিভ খবর, আমাদের একটা সোশ্যাল ট্রমার মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। কীভাবে ‘ডিটক্স’ হতে পারবে সংবেদনশীল মন? সেখানেই বোধহয় সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতির দারস্থ হতে হয় মানুষকে। মানসিক ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য। তাই তৈরি হয় ‘পোয়েট্রি ফর মেন্টাল হেলথ্’ এর মতন পদক্ষেপ। অনেকেই মনে করেন কবিতা সবসময় এই সময়ের কথা বলবে, হয়ে উঠবে প্রতিবাদের স্বর। কিন্তু তারও ওপরে রয়েছে কবিতার আরও বড় ভূমিকা, কবির ভূমিকা, তা নিরাময়ের। আজ মানসিক স্বাস্থ নিয়ে উদ্বিগ্ন সমস্ত প্রগতিশীল দেশ। সেই মানসিক স্বাস্থকেই শুশ্রূষা দিতে পারে কবিতা। পোয়েট্রি থেরাপি, আর্ট থেরাপির মতন বিষয় জরুরী হয়ে উঠছে এখন। ভালো সিনেমা, গান, ছবি এবং কবিতার কাছে ফিরে আসুক সংবেদনশীল মানুষ। প্রকৃতির মতো এসবই আমাদের শুশ্রূষা।
‘এ মাসের কবিতা’ বিভাগে এই মাসে আমরা তাঁদের কবিতা নিয়ে এলাম যারা অনেক দূরে থেকেও বাংলা ভাষায় কবিতার চর্চা করে চলেছেন। আমেরিকার প্রবাসী কয়েকজন বাংলা ভাষার কবির কবিতা।
Comments