top of page

মধ্যবর্তী শূন্যতার মনোলগ / সুদেষ্ণা ঘোষ

সেই অনেক আগে একটা পুরনো সেপিয়া আলো আমাদের জংধরা দরজার পাশে পড়ে থেকেছিল অনেকক্ষণ। আর মানিপ্ল্যান্টের চারা দ্রুত এত দ্রুত বেড়ে উঠছিল চারদিকে, আমরা ভয় পাচ্ছিলাম হারিয়ে না যাই একেবারে! একটা সেতুর যে দুরকম নাম হতে পারে, সম্পূর্ণ দু'দিকে চলে যেতে পারে এসব কথা আমরা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছিলাম। মনে আছে নীল রঙের একটা তারা অনেকক্ষণ জ্বলে নিভে গেল একসময়... অরণিকে তারপর থেকে ভুলতে পারিনি। অরণির কথা তো বলাই যায় কিন্তু তার আগে আমাকে সেই ছোট গাছটার কথা বলো এইমাত্র যাকে পিষে দিয়ে গেল লোহার কাঁটাওয়ালা জুতো। বা ক্যাম্পের সেই মা-বাবা যারা মরফিন খুঁজত ছেলেকে মারবে বলে। সেইসব ঘড়ির কাঁটা উল্লাসে যারা পুড়ে যেতে চেয়েছে চিরকাল। কিংবা সেই চাকরি হারানো যুবক যে ঝড়ের রাতে সব আড়াল করে সিগারেট ধরিয়েছে। কিংবা সেই শিশু যে মারা যাওয়ার আগে হারিয়ে ফেলেছিল তার নাম। বা সেই হাত যা জলে ডুবে যাওয়ার আগে ভেসে উঠেছিল অনেকবার। বা সেই বেলুনওলা যে গলির মোড়ে একা দাঁড়িয়ে থেকে চলে গিয়েছিল নিরুদ্দেশে। তারপর? তোমায় খাতায় এঁকে দেব কমলালেবু রঙের রোদ। একটা নিখুঁত সাজানো দাবার বোর্ডের উপর ঝাঁপিয়ে নেমে আসবে রাত। তোমার ফরসা আঙুল তিরতির করে কাঁপবে। জলে ভেসে উঠবে অনেক আগে হারিয়ে যাওয়া নীল তারার রুগ্ন আলো তুমি সমস্ত আলো পেরিয়ে চিৎকার করতে চাইবে কিন্তু দূরে মাইকে আবছা বাজবে 'অনেক দিনের আমার যে গান...' সকল গৃহ হারাল যার...এ জায়গায় পৌঁছে তুমি থাকতে পারবে না। তুমি ডাঁটভাঙা চশমা নাড়াচাড়া করে বলবে, 'এই ভয়ানক শীতের রাতে রক্তপাতের রাতে রিনি তুমি কষ্ট পাবে বলেই তো কিছু বলি না না হলে তো...'

Comments


bottom of page