আত্মহত্যা বিষয়ক নিবন্ধে গণৎকার শেষ পাতায় সই করছেন। লালনের পদ, আর পদের লালন - এই মিলন মহান অধ্যাবসায় নিয়ে আমি ব্যবচ্ছেদ টেবিলে দেখেছি বউবাজারের শেষ বাড়িটার খানিক আগে - এখানেই নিবন্ধের পরিণতি, আমার সাঁইবাহাদুরের নর্তকেয় পাতালপ্রবেশ। এরপরও, জঙ্গলের শেষ রিধা এখনও জাগিয়ে রেখেছে আমায়। এ'কথা শুনে নাস্তিক ব্যাধ হাসে। বনবাস গায়ে মেখে হরিণের চাকায় এগিয়ে যাই; আমি চমৎকারের কেউ নই, বন্ধুদেরও না কেউ। সমস্ত ভুল সহাবস্থানজনিত, এই মেনে নিয়ে গণৎকারের কথা মত নিজের জ্যামিতি ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে যায়। একটা মা-মরা হাওয়ায় অবিন্যস্ত স্টেশনের গন্ধ জঙ্গলের তদন্তে সমস্ত নিরপেক্ষতা ভেঙে দ্যায়। সহজ পথ, সে কেউ নয় আমার, কিংবা আমি তার। কোন পথই নয় ঐকান্তিক বিপ্লব ও শূন্যতার, এবং নিজস্ব জলাধারে হরিণ সেজে অপেক্ষা করা ব্যাধ একদিন তার স্ত্রীলোকের অংশ ভক্ষণ করে, স্ত্রী’কে দ্যায় আমার মাংস। সমস্ত চমৎকার তখন তার পেটের ভিতরে দেখি; একটি শিশু জায়মান তরলে শুয়ে মৃত্যুর স্বপ্ন দ্যাখে, আমার সমস্ত বৌদ্ধিক উপক্রীড়া বন্ধ হয়ে যায়। দেখি, বেলুনের মণ্ড থেকে হাওয়ার ফলন কমিয়ে দ্যায় জোকার। মেলার শেষ প্রান্তে শিশুটি গাছের সাথে মিশে গ্যাছে, তার সবুজ পাকস্থলীর ভিতর সেই মা-মরা হাওয়া গুঁড়ির বাদামী লুফে জোকারকে সাবধান করছে। বেলুনের রঙ মেলায় আর কোথাও নেই, শিশুটিও আর নেই। জায়মান তরলের ভিতর সে তার সবখানি ফেলে এখন চলে যাচ্ছে কলকাতা শহরের দিকে। কলের শব্দ আর যান্ত্রিক তুফান আমার ইন্দ্রিয়দের শয়তান করেছে ক্রমে, শিশুটিও যাবে; তার শরীর থেকে একদিন সার্কাসের কাপড় খুলে নিয়ে চৌমাথা আগলে দাঁড়াবে সাম্প্রদায়িক মেওয়ার দল, পুলিশি প্রহরায় শহরের মাঝে বসবে চলচ্চিত্রের তিনগুণ বৃহৎ আসর। তখনও শুনতে পাবো বন্ধুদের আর্তনাদ এবং কলকাতায় জনবিস্ফোরণের শব্দ। শর্বরীর কালো গুম্ফায় কোনো মানুষের মুখ - গণৎকারেরও নয়, পৃথক মনে পড়বে না।
আত্মহত্যা বিষয়ক নিবন্ধ / অর্ঘ্যস্বরূপ বিষয়ী
Updated: Jun 6, 2023
コメント