না-বাচক
ইন্দ্রাণী পাল
প্রতিটি সোজা পেরেকের জন্য দুঃখ হয়
আর ঘাসের ভিতর
বারুদ জেগে আছে
যখন মাংস সিদ্ধ হয়ে ফেটে
পড়তে চাইছে
ফ্রেস্কো থেকে তিনটি ঘোড়া দৌড়চ্ছে
মোমের আলোয় তাদের কুতকুতে চোখ
জাহাজগলির ভিতর সারি সারি ইঁদুরের খোপ
যখন স্প্যানিশ আর্মাডা জ্বলছে
প্রথম দুদিন তুমি কিছুই বুঝতে পারবে না
তারপর আস্তে আস্তে টের পাবে
অন্তর্বাহী রক্তের স্রোত শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে আসবে
আলো গিলে ফেলা আয়নাগুলো অন্ধকার প্রতিফলিত করবে
বারান্দা থেকে ছুঁড়ে ফেলা সিগারেট অথবা ডেটল তুলোর গন্ধে
তুমি ঘুমিয়ে পড়বে।
পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি
একইসঙ্গে ক্রিয়াশীল থাকবে।
লোভী মাংসের মতো কিছু ঝুলতে থাকবে অস্তিত্বের
নিকটে
মোমের গলনের খুব কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে বরফের স্তূপ।
আধুলি
রবিন বণিক
একটা আধুলির উপর দাঁড়িয়ে আছে মেজাজ–
যাহা কিছু দৃশ্য তাহাই কি আলো
আলোর ভেতরেও তো থাকতে পারে সুদৃশ্য বাউণ্ডুলে আঁধার, প্রাচীন প্রহেলিকা
দৃশ্যহীনতার খুব কাছে একটি জ্বলন্ত সিগারেট
একাঙ্ক নাটকের মতো আলো দিয়ে গেল চিরকাল
মেজাজের দিকে ক্রমধাবমান বিপ্লবী বর্ষাকাল---
ঘোড়াস্বপ্ন
তাপস গুপ্ত
খুরের হাওয়ায় উড়ে যাই শেষরাতে
ফুলের শিশির ধুয়ে প্রাবল্য ঘোর কৃষ্ণপক্ষের আকাশ আরও প্রকাশ্য মসীঘন ফেলে আসা ঘরের মত, তৃষ্ণার ফণার মত
পাতার মুচমুচে কান্নায় তামাকের মত বাদামি রং
খেয়ে নিতে থাকে ঘটনাপুঞ্জ সয়ে সয়ে চলা মাটিপোকা সারি
পায়ের নালে মাড়ানো কিছু উজ্জ্বল গল্প দর্শিণী পরিখা টপকে টাটকা গতি চাইছে
দম নিয়ে ঘাড় গুঁজে দিই মুক্তধারা মৃত্তিকা ঘাসে
কেটলির জলে ঘুরে ঘুরে ফুটছে রূপবতী ভোর
বায়না ব্যতিরেকে, চা পাতা পড়েনি এখনও
শ্বেত পেয়ালার শুভ্র শূন্য প্রসূতি গর্ভে।
সম্পূর্ণ বৈধ সংসার
তৈমুর খান
বিষাদের স্বাস্থ্য বাড়ে
যুবতী বিষাদ রোজ অন্ধকার হয়
আমি চুপচাপ নৈঃশব্দ্যের বাঁশি বাজাই
মনখারাপের হাসি শুনি
অলীক বিছানা পেতে দিলে
আমাদের প্রত্যহ সঙ্গম
সম্পূর্ণ বৈধ সংসার
আমি বিষাদের চুল বেঁধে দিই
উপলব্ধির আলতা পরাই পায়ে
দুই ঠোঁটে শূন্য দুই ঠোঁট নেমে এলে
আমাদের চুম্বনও দীর্ঘ হতে থাকে
বিরহের ক্যালকুলাস
বেনিয়া
চুপচাপ দেখি ধুলোর লড়াই
পাশে থাকা ছায়া মনখারাপের দেশ
ফেরার পথে নিজের পিছনে দাঁড়িয়ে আছি
রোমকূপে মুখ বাড়িয়েছে শব্দের প্রত্ন ভাণ্ডার
আলগোছে মুছে ফেলি নির্জন হতে
এই বেশ পরাজয়, বালির ফুরফুরে...
অবসরে নিজের শরীর থেকে পিছলে যাই
অবয়ব যে মাড়িয়ে যায় তাকেই ঈশ্বর ডাকি
বিরহের ক্যালকুলাস বোঝে পাখির ঠোঁট
চুম্বন অনুক্ত থাকলে শস্য খেতে খরা জন্মায়...