ফেরা
সৈকত সরকার
অনাথ-আশ্রমের খোঁজে কেটে গেছে সমস্ত বিকেল কারণ একেকটা শব্দ তার পরবর্তী বারান্দাকে জন্ম দিয়েছে একটি বারান্দা জন্ম দিয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের কোন সূর্যকে। এই সূর্য আর বিকলাঙ্গ বারান্দার সাথে আমার কোন নিকট সম্পর্ক নেই; পরীক্ষা করে দেখে নাও এই শব্দে ফুটে আছে কিনা আমারই জন্মবীজ! আমিতো পরীক্ষার কথা বলছি! সূর্যকে বিধান দেওয়ার মতো পাপ আর বারান্দাকে গারদে রাখার মতো ধৃষ্টতা কোনটাই স্পর্শ করেনি আমাকে।
অনাথ-আশ্রমের খোঁজে কেটে গেছে সমস্ত বিকেল আঁশ ছড়ানো উঠোনের কাছে জিওল মাছের মতো খাবি খাচ্ছে আমাদের আত্মপরিচয়...
স্মৃতি
দীপ শেখর চক্রবর্তী
গাছ থেকে একটি পাতা
নদীর জলে পড়ল
ভেসে গেল
পাতাটি আর গাছের রইল না
খুব হাওয়া হলে
গাছের পাতার জায়গাটি নড়ে
স্মৃতি নড়ে
নড়ে ওঠে
গাছটি একেকদিন চুপচাপ ভাবে
পাতাটি কতদূর গেল!
একেকদিন
ভেসে যেতে যেতে
আচমকা কেঁপে ওঠে
বহুদূর যাওয়া পাতাটি।
আয়নামহল
বিক্রম ঘোষ
জলের কঠিন হৃদয়ে শরীরের আচ্ছাদিত এই রূপ কার?
স্বাদ হয় ছুঁয়ে দেখি,
তরঙ্গে ভেঙে যায় ভেসে যায় ফুরিয়ে যায়
আবার ফিরে আসবে বলে
পদ্ম পাতায় খসে পড়ে একরত্তি আসমান তারা
অনেককালের কালো জলে ছলাৎছলাৎ শৈশব দিন
অতল অন্ধকারে ঝাঁপ দেয় বঁরশি ছেঁড়া মাছের মতো
এ কেমন অমোঘ নিয়তি!
আপন মগ্নতায় প্রতিধ্বনিত হয় এক নিরাকার কন্ঠ ভ'রে
দু'চোখে ভ্রম আসে, উন্মাদনা জাগে
যাকে দেখি তার বুকে ছুঁচের মতো ফুটে ওঠে নীল ঈর্ষা
লাল চোখে কামনা যেন আগুনে গলন্ত লোহার শলা
এমন নগ্ন অভিব্যাক্তিতে,
অহর্নিশ রঙিন বোঁটায় দেখা যায়
জন্মজড়ুল, ক্ষতচিহ্ন আর তীব্র বাসনা
যতক্ষণ না সে আমাকে সমূলে বিনাশ করছে গ্রাস করছে
যতক্ষণ না মুগ্ধতার রতিতে সম্পূর্ণ বন্ধি করছে
সে নারী আনন্দ সহচরী, স্থিতির দেবী
আমি কুড়িয়ে নেব পরম প্রেম কামিনীর জন্মান্ধ বাগান থেকে
অতঃপর রত্নগর্ভা নারী, পৃথিবী
এসো দুজনে জরিয়ে যাই আত্মরতির নিবিড় জালে।
অনুদি, অণুদি
অমিত পাটোয়ারী
নিউক্লিয়াস কিচ্ছু জানতে পারেনি
কখন
ইলেক্ট্রন জীবন থেকে চ’লে গিয়ে ওকে আরও
জোর দিয়ে গেল
গাছে
টাইপরাইটারে, চিঠিতে, ফিল্ম দেখে ভেজা চোখে
বাসস্টপে চেয়ারে
কত কত অন্যদের আশেপাশে
ঘুরতে... ঘুরতে...
গোপনে তাদের ছিবড়ে ক’রে দিচ্ছে
রেলের চাকরি নিয়ে আচমকা
বহু দূরে চ’লে যাওয়া ইলেক্ট্রন