top of page

বিচ্ছেদ 

ইন্দ্রাণী পাল

 

জল থেকে ফেনা ঘষে ঘষে তুলে ফেলায়

দুটো হাতই সাদা

বৃষ্টি হলে যে কোনো রাস্তাই দু'ফাঁক হয়ে যায়

প্রতি শনিবার আমাদের রুটি লম্বা হতে থাকে

আর ইন্দ্রিয়ের কাছে এসে একটা কুকুর

লাফিয়ে পড়ে

একটা শান্ত রবিবার; আঠালো বিকেল

তোমাকে অভ্যর্থনা জানাবে, টেবিল থেকে

ফুলদানি লাফিয়ে নামবে...

 

বৃষ্টির কাছে এসে সমস্ত রাস্তা দু'ভাগ হয়ে যায়।

 

 

 

 

অনিবার্য  

দীপঙ্কর সরকার

 

প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় ছিল সূচিমুখে সন্দেহের সেতু

আনত নয়ন ছুঁয়ে চলে গেছ দিগন্তে সুদূর ।

বুঝিনি তোমার চতুরালি কূট ও কচালিতে

অনভ্যস্ত আমি।

 

আমাকে বিমুখ করে ফিরে গেছ সোনা রোদ্দুর

পারতপক্ষে কিচ্ছুটি করার ছিল না, প্রত্যাসন্ন

ঝড়ে উড়ে গেছে সমূহ সম্ভাবনা।

 

 

 

 

মনখারাপের দিন

পূর্ণেন্দু মিশ্র

 

অজস্র শব্দ ছিঁড়ে আসে কাচ-ভাঙা আলো,

কানের কাছে ডানা ঝাপটায় তীক্ষ্ণ ঠোঁটের পাখি,

ঠুকরে খায় নিমফুলের ব্যথা।

তত গলে আসে সমস্ত দিন।

এমন দিনে মাথার ভিতরে কসাই ধার করে

রাগ,

রাগী হাওয়ায় টুকরো টুকরো উড়ে যত সবুজ, সবুজ চিঠি

জলে ঘেরা অসহায় মেঘ-বিকেলের দ্বীপে ।

 

 

 

প্রস্তাবনা

মহাজিস মণ্ডল

 

যতটা অন্ধকার মেখেছি

ততটাই আলো চাই

 

প্রশস্ত বারান্দা পেরিয়ে

কখনও ছুঁয়েছি নক্ষত্র

আবার কখনও বা অমাবস্যা

 

সময়ের চলাচলে দেখি

বিষাদের মর্মর অথবা

আনন্দের ডালি সাজিয়ে রাখো তুমি

একজন ঘোড়া

সৌমেন শেখর

 

যে লেখাকে ছেড়ে দিয়েছিলাম দূর দিগন্ত রেখায় ঘোড়ার মতন, সে ঘোড়া এখন এক বৃদ্ধ জাদুকরের। ম্লান, রক্তাভ সূর্যের পেছনে তার ছায়ার সিলুয়েট এসে পড়ে আধভেজা আলের কিনারে। নরম ঘাসে মগ্ন সে ঘোড়াটির খুঁটে খাওয়া থমকে দেয় একটি আহত শামুকের প্রাচীন গতি। খানিক স্তব্ধতার পর ঘাড় ফিরিয়ে তাকায় সে তার অচেনা মালিকের দিকে। প্রবল পরাক্রমী প্রভু তার, কেমন ভাঙা সুখবরের মতন আজ, ভীত অথচ উদাসীন চেয়ে থাকে নিষ্প্রভ, গলে পড়া চাঁদের দিকে। ঘোড়াটি ভাবে, চাঁদ কি তবে কোনো শয়তান? মালিকের আত্মা কিনেছে সামান্য কিছু উপঢৌকনের বিনিময়ে? একরাতে ঘোড়াটি দেখেছিল তার মালিকের অসীম ক্ষমতা। অদ্ভুত মন্ত্রের বলে এক অপূর্ব, দীর্ঘ দ্রাঘিমার নারী এসে নেমেছিল আস্তাবলের কাছেই। অপার্থিব চোখের ইশারায় ঠিকরে পড়ছিল অব্যক্ত কামনার জলরঙ। হ্রেষা ডাকতে ভুলে গিয়েছিল ঘোড়াটি। তারপর থেকে কেমন পালটে গেল তার মালিক। মুখে প্রশস্ত হাসির বদলে চোখে জেগে উঠলো নিদারুণ আদিম কামনা৷ তারপর অন্ধকার আরো অন্ধকারের অপেক্ষায় কাটতো সারাদিন। আজ একদশক পর ঘোড়াটি বোঝে জাদুকরের লম্বা কালো টুপির ভেতর ঢুকে থাকা তার মালিক আর মানুষ নয়, মানুষের মতো এক কঙ্কাল মাত্র। সামনের পূর্ণিমায় বাঁকা শিংয়ের মতো চাঁদ এসে নিয়ে যাবে সে কঙ্কালের আত্মা৷ 

 

স্পর্শ, রক্ত, ঘামের সম্পর্ক পেরিয়ে, শ্রমিক, মালিকের সম্পর্ক পেরিয়ে ঘোড়াটি আজ বোঝে…

 

সবার উপরে মানুষ সত্য নয়…

 

                 সত্য শুধু, নরম, কচি ঘাস।

স  ম্পা  দ  ক  ম  ণ্ড  লী

তৃণা চক্রবর্তী

সুরজিৎ পোদ্দার

সুন্দরম দাস

bottom of page