লেখচিত্রের বাইরে
মধুসূদন রায়
মাংসের দোকানের সামনে কারা লিখে যায় শোকবার্তা?
তারা লোভ ও লালার স্বাদ নিয়ে দেখেছে জীবন আস্ফালন ছাড়া জটিল কোনও অনুবাদ নয় ।
অনিবার্য স্রোত আর আয়ুপ্রস্তাবের পাশে মোহ-মেঘ প্রলেপ দেয় দাম্পত্য কলহে ।
বানপ্রস্থ জীবনের পাশে চিরহরিৎ বসন্ত ভিক্ষায় একটি তর্জনী ।
স্মরণ
বিধান সাহা
*
এই যে বসে আছি, তোমাকে মনে পড়ছে— টের পাচ্ছো? সকাল গড়িয়ে যাচ্ছে। গতকালের হাওয়া এখনও বয়ে যাচ্ছে মনের ভেতর। যেন আমিও ছিলাম ওই মুখরিত স্নিগ্ধ নিধুবনে। আকাশের রং কী তা তুমিই ভালো জানো। আমাকে জানার অবকাশে আমি তোমাকে জেনেছি রাই। দেয়ালে এতো যে হাত এঁকেছো— এই বোবাভাষার ভেতর আমি পথ হারিয়েছি। পাখির কূজন আর তোমার ছুঁড়ে দেয়া শিষ এক করে ফেলেছি। আর তোমার চোখের মতো মায়াভরা দীঘিতে এখনও যে দেখেনি নিজের শরীর— তাকে বলো, অভিমানে চেনা পথও দীর্ঘ মনে হয়।
তোমাকে দেখিনি রাই, শান্ত শীতের মতো আমাদের প্রেম জমে আছে।
*
শোনো, তোমাকে মনে পড়ছে। হুলুস্থুলু মনে পড়ছে। মনে পড়তে পড়তে এদিকে চাঁদ উঠে গেলো। চাঁদের ভেতর কার যেন ছায়া। সে কি তুমি? নদীপাড়ে এখন তুমুল কুয়াশা। আমি আশায় বেঁধেছি ঘর। আমি আশায় হয়েছি খুন। হলুদ সর্ষের বনে তোমার কথা মনে পড়ছে। পাতা চুঁইয়ে এদিকে টুপটাপ জল পড়ছে আর তোমার জন্য একটু একটু করে প্রেম বেড়ে যাচ্ছে।
অনন্ত তিতাস, শোনো, তুমিও তিয়াশ-মেটা জল।
নকশা
বেবী সাউ
অন্তর্গতভাবে, সেখানেই ছেড়ে আসা ভালো ---
যতটুকু প্রাচীর তোমাকে স্পর্শ করে
আলো অভিঘাত জেনে প্রতিটি ঘড়ি এবং কাঁটা
জীবনপ্রণালীর শরীরে হাত রাখে; মৃদু কষ্টে গিলে নেয় কফ থুতু
সালভাদরকে চিনি না আমরা! প্রসঙ্গত তাই কোনও ঋণ নেই আমাদের
শুধু অর্জিত সুখের কথা শুনতে শুনতে একেকটি ব্যাঙ ডেকে উঠছে
ঈশানের কোণে জমে আছে আগাছার হাবুডুবু
পিঙ্গল শূন্যতা আমাদের প্রতিঘাত দেবে?
আর এই নিশিভোর ক্ষণে তুমি, আকুলিবিকুলি, চেয়ে বসবে অপত্য সম্ভাবনা!
বহুরূপী
সতীন্দ্র অধিকারী
কোটি কোটি অনু পরমানুতে ভাগ হয়ে যাওয়া এ জগৎ
এ সংসার এখন বড় ফিকে মনে হয়!
জীবনের পাওয়া না পাওয়াগুলি...
মানুষেরা হেঁটে যায় হেঁটে যায়
তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি নিজের ওপর।
ভয়! ভয় হয় ভীষণ রকম।
ভাবি গাছতলে বসে থাকা পূর্বপুরুষের কথা
রাত হয়
আর দিন
মানুষ তুমি কোন পথ বেছে নেবে!
মধ্য রাত্তিরে কে যেন বলে যায় স্বগুণ আর নির্গুণ নামে
কোনো অ্যাক মানুষের শস্য যাত্রার কথা...