ভালোবাসা
তাপস চক্রবর্তী
ঘুমন্ত শিশুর বুকে এসে বাসা বাঁধে সরল জোনাকি,
অষ্টোত্তর শতনাম তার,আমরা কেবল ভালোবাসা বলে ডাকি।
ওই ডাকগুলি ভেসে থাকে মৃতনক্ষত্রশতকে
কখনও রোদ্দুর হয়ে ঝরে এজমালি পৃথিবীর চোখে।
তুমি ,আমি সেই পৃথিবীর ভাঙা কোনও খণ্ড পরিচয়
আঙুলে তণ্ডুলভষ্ম ধরে চেপে রাখি ব্যক্তিগত ক্ষয় ।
হৃদয়ে শূন্যতাসহ নোনা ঘাম,গাঢ় রক্তে মাখামাখি
হাজার কারণ তার, আমরা কেবল ভালোবাসা মনে রাখি।
ইমিউনিটি
নভোনীল চট্টোপাধ্যায়
কথাবার্তায় সামুদ্রিক হয়ে ওঠে
একটা ঘর।
পাথরে ঢেউ আছড়ে পড়ার মতো হাসিতে ফেটে যায়
কার্পাসের বীজ।
নির্জন যাদের প্রয়োগশালা,
আজকাল শুধু তাদের গায়েই
মানুষের গন্ধ।
তাই যথেষ্ট কারণেই,
আমার শহর প্রতি রাতে
আমাকে খুন করতে আসে।
আর সেই খুনখারাপি এড়াতে,
আমি তোমার কণ্ঠস্বর আর হাসিকেই
ব্যবহার করে আসছি দীর্ঘদিন ধ'রে।
সত্যি বলতে কি,
যৌনতা না থাকলে
আমি এতদিনে মারাই যেতাম।
রৌদ্রমুখর
রাজদীপ পুরী
ধরো সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে চলে গেছে কেউ,
অন্ধকার এত নিবিড় হয় ভাবতে ভাবতে তুমি বসে রইলে বিহ্বল হয়ে,
আমিও আর জামার আস্তিন খুলে তোমার দুচোখ থেকে মুছিয়ে দিলাম না ভয়—
সারা গায়ে গুড়ো গুড়ো বরফ মেখে
কাগজের উজ্জ্বল বলের মতো তুমি গড়িয়ে গেলে
উষ্ণ ভোরের দিকে... কোলকাতা ক-এ কোথাও শুরু হল দিনের প্রথম অধিবেশন—
আর কী যেন লিখব, গতকাল সারারাত খুব ভেবেছিলাম...
সমস্তটাই ভুলে গেলাম আমি!
পরজীবী আত্মার বই
শীর্ষা
পুরনো গালিচার মতো ডুবে যাচ্ছি
অন্ধকারের নিকষ শরীরে--– যেন কী মহাশ্মশান,
আদিঅন্তহীন, সহস্র বছর ধরে জমে থাকা
পৃথিবী নামে কালো মেয়েটির অভিমান
জমাট বেঁধে বেঁধে পাথরের স্তন হয়ে গেছে--–
আচমকা তার থেকে উঁকি দেয় তোমার হাসিমুখ,
নিভু নিভু অলক্ষ্য তারাদের মতো--– পাথরের স্তনে
একফোঁটা দুধভরা বৃন্তকুসুম।