top of page

সৌরলতা

শর্বরী চৌধুরী

 

                               

চিতসাঁতারের জীবন

মাঝে মাঝে ডুব দেওয়া অতলে

সূর্যের আলোয় যখন স্পষ্ট হয় গুপ্তধন,

সুবৃহৎ লাফ

এইসব নিয়েই জন্ম-মৃত্যু পার করে দেওয়া

 

                                

সমর্পণ হন্তারক

সর্পদষ্ট কুসুম ঝরে যায় গোধূলিবেলায়

নক্ষত্রেরা সভা করে

প্রাণের শর্ত মেনে নতুন বিকেল

দুহাতে সময়ের বীণা বাজিয়ে যায় অপার প্রেমিক

 

 

জিজ্ঞাসা

সুমন জানা

 

 

গান শেষ হলে তুমি

সাইকেলগুলি চলে যাওয়ার

অপেক্ষায় থাকো।

তাদের গলার শব্দ, ছোট ছোট হাসি

দিগন্তের ওইপারে মিলিয়ে গিয়েছে

 

#

 

তখনও তো সন্ধ্যা হতে কিছু দেরি ছিল

ছাদে যারা পায়চারি করে তারা ছাদ থেকে তখনও নামেনি।

ছোট এই মফস্বল শহরের ছাদগুলি তোমাকে চেনে না,

তোমারও তো চেনা নয় সেইসব পাখি

জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতো সারি দিয়ে উড়ে গেছে যারা।

 

#

 

কিছুই ভাবোনি তুমি এতক্ষণ,

আলো আর আঁধারের ঠিক মাঝখানে

কেবল নিজেকে এনে দাঁড় করিয়েছ ...

 

 

 

অসুখ

শোভন মণ্ডল

 

একটা ধপধপে সাদা বেড়াল কার্পেটে গড়াগড়ি খেয়ে মিলিয়ে গেল

আমি একে আদর নাম দিয়ে তুলে রেখেছি ফ্রেমে

সারা ঘর জুড়ে আমার অজস্র ফ্রেম, এইভাবে ছড়িয়েছিটিয়ে

জেনে গেছে সবাই, এই পাগলামো কীভাবে কুরেকুরে খাচ্ছে মাথার বুদ্ধিরস

এক অলীক গহ্বরে গা ডুবিয়ে বসে থাকি প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ

একে আমি ম্যাজিক ভাবি, নিতান্তই হাত-যশ

এছাড়া কী-ই বা ভাবতে পারো?

আঙুলের স্পর্শগুলো ভেসে যায়,  অচেনা লাগে

তবুও তুমি এলে ছুঁয়ে দেখি ঠোঁট

কী জানি কী ভাবি!

 

বন্দুকের ট্রিগার ভেবে এই দেখো

তোমার স্তন চেপে ধরি

 

 

 

 

 

ইচ্ছেপালক

সায়ন্তনী হোড়

 

ছিপছিপে বিকেলের গায়ে

যেসব আদর লেগে থাকে তারা পালকের মতন

উড়ে যায় একটা নাভিহীন আকাশের দিকে

 

রংচটা  ইচ্ছেগুলো চিলেকোঠায় জমাট বাঁধছে

পরজন্মে ফুল হয়ে জন্মাবে বলে

 

 

 

 

স্ব

শৌভিক পাল

তোমার অতল জলে ডুব দিয়েছি

আর ফেরার কোনো পথ নেই

এখন মৃত্যু, নয়তো ভাগ্যজয়ী অনন্ত সাঁতার।

 

আমিও অন্ধকারে শব্দমালা গেঁথে তুলি

সন্ধ্যাকালীন অন্ধকারে কাঁদছে নদী

যেন দু’পাড় ভেঙে ছুটে যাবে তেপান্তরে

 

আগুন ঘিরে কারা যেন হাততালি দেয়—

ঘুমিয়ে পড়ো, মিথ্যে এ সব ছন্দ খোঁজার 

চতুরতা। তুমিও কি মিথ্যে বলো

গোধূলি-রাঙা সাদা কাশের স্বকীয়তা?

 

সবাই তোমাকে দেখতে পায় না

ভালোবাসা তো দূর অস্ত!

 

মান বাঁচানোর লড়াইয়ে জয়ী না হলে 

তোমার উজ্জ্বলতা বিন্দুমাত্র কমে না, 

কিন্তু আমার চোখ থেকে মানের পর্দা 

কে সরাবে? এ অবস্থায় 

খোলা মাঠে মাথার উপর পাংশু চাঁদ মাথায় রেখে 

পাশাপাশি বোবার মতো বসে থাকা ছাড়া 

উপায় থাকে না।

 

আমার সঙ্গে আর সবার কথা চলে

কেবল নিজের‌ই কথা নেই দীর্ঘদিন।

 

তাই হঠাৎ এমন ছায়ামাখা

প্রশস্ত ধানক্ষেতের পাশে হেঁটে গেলে বুঝি

জীবনে এমন কোনো মূল্য আছে 

যা কখনো জয় করা যায় না।

সেখানে সমর্পণেই স্বর্গসুখ।

bottom of page