‘ওলো সই’
শ্রীময়ী ভট্টাচার্য
জল অতি সাবধানী শিশু
এক চুল সরলে সে জানে তার সইবে না ভার
চোখে তাই পুরেছি লাভা
সে উষ্ণতায় তবু বুদ্বুদে মাখা সান্ত্বনা
ঝরে পড়ে অ~পূর্বরাগে...
চোখের চামড়া ছিঁড়ে শিকড়ে গেঁথেছি যত প্রেম
তুমি তার রক্তের দাগে
আলতার মত করে পা ডুবিয়ে চলে গেছ ছুটে..
অবগুন্ঠনে,
আহা,
এয়োতি চিহ্নে সঁপে শীৎকার
এ’বছরও বসন্ত ছিনিয়ে নিয়েছ..
হিংসুটে!
বেঁচে থাকা ই যায়
সোনালী ঘোষ
যদি জানতাম,দীর্ঘ বনবীথির মত কোন মানুষ হঠাৎ
ছায়া রেখে চলে যায়,
আমি অভ্যাসের ভেতর রেখে দিতাম তাকে
আর নাম দিতাম অপেক্ষা
যদি জানতাম, একটি পাহাড়ের কাছে গেলেও কোন
ক্ষতি নেই, এত অস্থির হতাম না
অথচ কেউ কোনদিনই আমাকে হাতে ধরে চিনিয়ে দেয় নি
এটা সমুদ্র বা ওটা নদী
তাই বারবার ভুল করে উত্তরের জায়গায় দক্ষিণে হেঁটেছি
তবু তো এসব না জানলেও
খুব সহজেই বেঁচে থাকা যায়...
তিনটি কবিতা
রক্তিম সূর্য মণ্ডল
১.
গানের দু-কলি আমি
কোথায় শুনেছি যেন!
'ভুলে গেছি' মনে পড়ে;
তার বেশি
গায়কের ব্যক্তিগত ক্ষোভ,
মৃত্যুর প্রতুলতা দেখে
আঁচ পায় তোমাকে পেয়েছে।
২.
এরা আমার কথা
ম্লান
হেমন্ত যেন,
অজানা জ্বরের উপনিবেশ।
দীর্ঘজীবী কিছু মুখ
শব্দে পাতানো বন্ধুর থেকে বেশী
লতানো, নিত্যবিলাস
ওরা ফুলের বোন
ফুলোদরা।
৩.
পাতলা হাওয়া যায়
সারাদিন ঢেউ খলবল করে
জলে পড়ে থাকা আকাশ মাটি হয়ে যায়।
শহীদ মিনারে এসে শেষ হবে মিছিল
মিছিল শেষ হবে মার্কিন দূতাবাসে এসে;
তারপরও কত হাঁটা...
রোগা রোগা শরীর আলপথে হাঁটে
সব কুমড়ো পাতার কাঠপিঁপড়ে।
সন্ধ্যার দীঘি তখন একচোখা প্রেতের মতন,
ওরা তাতে পা ধোয়।
আর কোথা যাব মা? এখানেই বসি
পরিখা
সৈকত সরকার
একটি চিঠির উত্তরে
ভেসে আসছে গলিত আগুন।
চিরকুটের মুখে মুখে প্রচারিত
নিভে আসা শিরোনাম, যা এখন উদগিরণের থেকে দূরে।
মানুষের পাশে বাঁধানো নতজানু গাছ
সন্ধে হলেই কারা যেন দেশলাই জ্বালিয়ে সভা করে।
তোমার বাড়ির চালে ফলে থাকে
নীতিবোধের পুঁই, মাচা ছাড়া,
তাকে তুমি আজন্ম দিয়েছ প্রশ্রয়
আমাদের প্রজাতান্ত্রিক গ্রামে।
পায়ের কথা
অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়
একটা গ্রামের বেদানা থেকে কিছু রস আর চেহারা বদলে ফেলার রংগুলি যখন প্রস্তাবে এলো
সুরিখানার দরজা তখন বন্ধ হয়ে গ্যাছে।
#
তখন বৃষ্টির কেঁপে ওঠা কপাল থেকে উনুনের গন্ধ। নাভির অন্ধ বিকার সব শুয়ে থাকা মেঘেদের জানিয়ে গেল সাদামাঠ। নির্বিকারতারিখ।
#
এইমাত্র একটা ক্ষেত। চিনতে পারছি গুদামঘর। ভেতরের মানুষটিকেও। আসা যাওয়ায় যার বিছানা বড় প্রিয় ছিল।
#
লালা পড়ে আছে জঙ্গলজুড়ে। লাশের চাতাল ওটের পাচ্ছে রুমালের শব্দ।
ঈশ্বরের বাতিঘর থেকে ফিরে আসামান চিত্র পাঠ।
#
এভাবেই আহ্বান আর
আমাদের জাতীয় সংগীত।
#
তুমি পরামর্শ হয়ে ওঠো আবার। ষড়যন্ত্র করতে করতে মিলিয়ে নাও রক্তপাত।
#
মানুষের বেঁধে রাখা চিহ্নগুলি।